যাত্রা শুরু হলো নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বছর ১৪৩০। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে, উদ্‌যাপন করতে সমগ্র বাঙালি জাতি আজ এক কাতারে। বাংলার ঐতিহ্যকে যে সকল উৎসব অনুষ্ঠান ধারণ করেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা পহেলা বৈশাখকে নববর্ষ হিসেবে পালন করে আসছে ।

নববর্ষ বাঙালির সহস্র বৎসরের ইতিহাস ঐতিহ্য ,রীতিনীতি, আচার-অনুষ্ঠান, সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বাঙালিরা এই দিনে পুরানো বছরের ব্যর্থতা,ব্যথা, নৈরাশ্য,গ্লানি ভুলে গিয়ে নতুন বছরকে আনন্দে বরণ করে নেয়,সমৃদ্ধি ও সুখময় জীবনের প্রত্যাশায় । নববর্ষ বাঙালি জতির জীবনে এক অনন্য বৈশিষ্টময় একটি উৎসব। বাঙালির নববর্ষ এক অনন্য বৈশিষ্ট্যময় উৎসব। কেননা পৃথিবীতে প্রচলিত অধিকাংশ বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি কোনো না কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও বাংলা নববর্ষের সঙ্গে ধর্মীয় অনুষঙ্গ নেই।

মূলত কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের ব্যবস্থাকে ঘিরে এর প্রচলন। পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের দেনা-পাওনার হিসাব মেটানো। দিনে-দিনে পয়লা বৈশাখ হয়ে ওঠে এক সর্বজনীন সাংস্কৃতিক আনন্দ-উৎসব। ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলা ভূখণ্ডের সব মানুষের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।

ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সব পেশার, সব শ্রেণির মানুষ একত্রিত হন মঙ্গল শোভাযাত্রায়। এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। পহেলা বৈশাখ উদযাপনে অংশ নিতে আসা নারীদের মাথায় শোভা পায় ফুল, মুখে মুখে আল্পনা, তরুণদের হাতে রঙিন পতাকা এবং শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় বিভিন্ন রঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। ১৯৮৯ সাল থেকে এই আনন্দ শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের একটি অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

“বিদায় নিলো আজ পুরনো বছরের সূর্য। আসবে নতুন সকাল, নতুন দিন, নতুন স্বপ্ন, নতুন আসা। আর নতুন হোক আজকের ভালবাসা।”

“শুভ নববর্ষ” ।

সাইফুর রহমান শোভন | ১ লা বৈশাখ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ