বয়ঃসন্ধি পেরনো মেয়েদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋতুচক্র হচ্ছে শারীরিক সুস্থতার অন্যতম নিদর্শন। যদি কোনও কারণে তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তাহলে বুঝতে হবে যে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেনে নিন ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়ার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণও। প্রেগন্যান্ট না হলেও যদি ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তা হলে দেরি করবেন না, যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
থাইরয়েডের সমস্যা: থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ওভার অ্যাকটিভ হলে যতটা সমস্যা, আন্ডার অ্যাকটিভ হলেও তার চেয়ে কিছু কম হয় না কিন্তু! থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বাড়লে ঋতুস্রাবের পরিমাণ ক্রমশ কমে আসবে। বাড়বে অ্যাংজ়াইটি, ভয় পাওয়া, হৃদস্পন্দনের হার।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, থাইরয়েডের ওষুধ, অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট, ব্যথা কমানোর ওষুধ, মৃগীরোগের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এমন হতে পারে। তবে নিশ্চিত হওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত।
এন্ডোমেট্রিওসিস: আপনার পিরিয়ড কি খুব যন্ত্রণাদায়ক? যৌন সঙ্গমের সময় এবং শেষে ব্যথা হয় খুব? মলত্যাগের সময়েও তীব্র ব্যথা অনুভব করেন? সেই সঙ্গে অতি স্রাব বা একেবারে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা থাকলে তো অতি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম: যাঁদের যৌন সংসর্গ হয়নি কখনও, তাঁদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এই রোগ। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের আরও কিছু লক্ষণ অবশ্য থাকে। যেমন ধরুন, হিসেবের বাইরে ওজন বাড়া, মুখসহ শরীরের নানা জায়গায় অবাঞ্ছিত রোম গজানো, ছেলেদের মতো টাক পড়া বা তার আভাস দেখলেই সতর্ক হতে হবে। তবে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থাকলে যেমন রক্তপাত অনিয়মিত হয়ে যায়, তেমনই আবার যখন হয় তখন এত বেশি ব্লিডিং হয় যে রক্তাল্পতায় ভোগার আশঙ্কাও থাকে। আজকার বহু অল্পবয়সি কিশোরীরও এই রোগ হচ্ছে।
প্রেগন্যান্সি ও স্তন্যদান: যাঁরা নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে জড়ান, তাঁদের ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়লে অতি অবশ্যই একবার প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানো উচিত। আপনি সুরক্ষার সব রকম বন্দোবস্ত করে সম্পর্কে গেলেও কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েই যায়। তাই বেশি দেরি না করে হয় পরীক্ষা করান, না হলে ডাক্তারের দ্বারস্থ হোন। গর্ভাবস্থা ছাড়াও যে সব মা স্তন্যদান করছেন, তাঁদেরও পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়। তবে অতি অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে। গর্ভবতী হওয়ার কারণেই যদি আপনার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে থাকে, তা হলে সাধারণত মাথা ঘোরা, গা গোলানো, ক্লান্তি, বিশেষ কোনও গন্ধের প্রতি অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতার মতো কিছু উপসর্গ থাকে।